উলুবেড়িয়া, হাওড়া, ২৮ মে ২০২৫: পুষ্টিহীনতা রোধে এবং শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসন আজ এক মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ব্লকের সভাকক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে গুরুতর অপুষ্টিতে (SAM – Severe Acute Malnutrition) ভুগতে থাকা ১৬ জন শিশুর হাতে উন্নতমানের অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ শিশুদের সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়ক হবে এবং সমাজে পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট জনেরা
এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ব্লকের বিডিও এইচ. এম. রিয়াজুল হক, যুগ্ম বিডিও লিপিকা রায়, হাওড়া জেলা পরিষদের মেম্বার নুর সালাম, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অতীন্দ্র শেখর প্রামাণিক, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম মোল্লা, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মুরাদ আলি, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ শেখ সওগাত আলী, নারী ও শিশু কর্মাধ্যক্ষ মুনমুন সাউ, স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ চম্পা সামন্ত, খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ কাকুলি দাস, CDPO সৌরভ চক্রবর্তী এবং ACDPO সমিত ঘোষ। এছাড়াও ব্লকের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা উপস্থিত থেকে এই উদ্যোগকে সফল করতে সহায়তা করেন।
বিডিও-র কণ্ঠে আশার বার্তা
অনুষ্ঠানে বিডিও এইচ. এম. রিয়াজুল হক শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তাঁদের পুষ্টি নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের পুষ্টি ও সুস্থতা নিশ্চিত করা আমাদের শুধু প্রশাসনিক নয়, এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্বও বটে। SAM শিশুর সংখ্যা কমাতে আমরা সঠিক সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষভাবে জোর দিচ্ছি।” তাঁর এই বক্তব্যে প্রশাসনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিশুদের প্রতি দায়বদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সুদূরপ্রসারী প্রভাব এবং প্রত্যাশা
প্রশাসনের এই উদ্যোগ স্থানীয় মা ও শিশুদের মধ্যে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি করবে, তেমনি পুষ্টিহীনতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে শিশুরা যেমন শারীরিক সক্ষমতা ফিরে পাবে, তেমনি পরিবারগুলিও পুষ্টি সম্পর্কে নতুন ধারণা লাভ করবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রশাসনের এই ধরনের ধারাবাহিক ও মানবিক উদ্যোগ আগামী দিনে সমাজে একটি সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। এটি কেবল পুষ্টিহীনতা কমাতেই সাহায্য করবে না, বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের গুরুত্ব সম্পর্কেও মানুষকে আরও সচেতন করে তুলবে। উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের এই প্রচেষ্টা অন্যান্য এলাকাতেও অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণে উৎসাহিত করবে বলে আশা করা যায়।