আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে, যা সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনাটির প্রভাব এখনও পুরোপুরি কাটেনি, এমন অবস্থায় আবারও খবরের শিরোনাম হয়েছে আরজি কর হাসপাতাল। গত রাতে একটি নার্সিং ছাত্রী নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এই ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে শুরু হয় তীব্র আলোচনা। প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই নার্সিং ছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন। তার আত্মহত্যার চেষ্টার পেছনে কি কোনো হুমকি সত্ত্বা ছিল, নাকি অন্য কোন কারণ কাজ করেছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
নার্সিং ছাত্রীর এই আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় হাসপাতালে রক্তাক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, নার্সিং ছাত্রীর রুমমেটের সঙ্গে তার একটি তর্ক হয়, যার ফলে রুমমেট কিছু গোপন কথা প্রকাশ করে তাকে হুমকি দেয়। এই ঘটনার কারণে ভেঙে পড়া নার্সিং ছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই ঘরে বসবাস করার কারণে একে অপরের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন, যা পরস্পরের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে এই ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ এখন বিষয়টি তদন্তের ব্যাপারে কাজ করছে।
পুলিশকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশকে জানানো হয়েছে, যাতে তারা নার্সিং ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে আসল কারণ জানার চেষ্টা করতে পারে। বর্তমানে নার্সিং ছাত্রী আগের তুলনায় কিছুটা ভালো আছেন, কিন্তু এখনও মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। আত্মহত্যার চেষ্টা করার সময় তৃতীয় বর্ষের এই নার্সিং ছাত্রীর নাম বুল্টি গড়াই, যিনি পুরুলিয়া থেকে এসেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষও এই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এবং সোমবার তার রুমমেটকে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র থেকে জানা গেছে, রুমমেট বুল্টি গড়াইয়ের কিছু গোপন তথ্য জেনে যান এবং বুল্টিও তার রুমমেটের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন। দুটি পক্ষের মধ্যে এই তথ্যের গোপনীয়তা প্রকাশ পাওয়ার ফলে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে, বুল্টি রাতে পড়াশুনা করার সময় আলো জ্বালালে রুমমেটকে ঘুমের অসুবিধার কথা জানালে এতে অশান্তি শুরু হয়। বুল্টি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এই সমস্যার প্রতিকার চান, কিন্তু তার ফলস্বরূপ কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে অবসাদে আক্রান্ত হয়ে পড়ে এই নার্সিং ছাত্রী। এখন তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি পরিষ্কার হবে।