দুই মেয়েকে নিয়ে অসহায় স্ত্রী। সৌউদি থেকে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যু মুর্শিদাবাদ যুবকের, শোকের ছায়া এলাকাজুড়ে।

Share this page

দারিদ্র্য পরিবারে কষ্ট করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করে ভালো রেজাল্ট করেও, সংসারের আর্থিক অভাবে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। চাকরির আশা না করে সংসার সামলাতে রুটিরুজির টানে সৌউদি আরবে কাজে গিয়েছিল জীবন্তির আম্বিয়া সেখ । আর সেখানে গিয়ে ঘটল বিপত্তি। সৌউদি আরবে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন মুর্শিদাবাদের যুবক।

মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি থানার অন্তর্গত লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আম্বিয়া সেখ (৩২)। পরিবারের বৃদ্ধ মা বাবা, দুই মেয়েকে স্ত্রী অসহায়। অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া এলাকাজুড়ে। পরিবার সুত্রে জানাগেছে সৌউদির হারদায় কাজ করত। বেশকিছু দিন ধরে শারীরিক অসুস্থ জনিত কারণে গত রবিবার সকালে আম্বিয়া বাড়ি ফেরার জন্য এয়ারপোর্ট আসছিল। তার আগেই রাস্তার মধ্যে হটাৎ গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তারপর সেখান থেকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। মৃত আম্বিয়ার বাবা নিয়ামত সেখ বলেন ‘ অন্তত একবার ছেলের মুখ দেখার জন্য বাড়ি আনার অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু কেউ সাহায্য করছে না। কোম্পানি দায়িত্ব নিচ্ছে না। তাছাড়া নিজের চেষ্টা আনতে লাখ লাখ খরচ হবে! এতো টাকা কোথায় পাব? শেষ পর্যন্ত সৌউদি তে আজ বিকেলে জানাযার নামাজ পড়ে কবর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মৃত আম্বিয়ার স্ত্রী রেশমা বিবি বলেন ” আমার স্বামী গত ছয় বছর ধরে সৌউদিতে আছে। গত তিন বছর আগে কিছুদিনের জন্য বাড়ি এসেছিল। কাজের জন্য আবার গিয়েছিল। বেশকিছু দিন ধরে লিভারের সমস্যা জন্য শরীর খারাপ করছিল। পরিবারের সবাই মিলে ওকে বাড়ি ফেরার জন্য বলা হয়। রবিবার প্লেন ধরার জন্য রাস্তায় আসার আগেই মারা যায় বলে খবর আসে। এই ভাবে চলে যাবে ভাবতেও পারছি না।

দুই মেয়ে। আট বছরের বড়ো মেয়ে আসমানতারা খাতুন, এবং তিন বছরের ছোট্ট মেয়ে রহনা খাতুন। পরিবারের একমাত্র রোজকার স্বামীর মৃত্যু! কিভাবে চলবে সংসার কে দেখবে আমাদের। পরিবারের তরফ থেকে সরকারি সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে। এই অসহায় পরিবারের পাশে সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কী না সেটাই এখন দেখায় বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *