জুয়ারী স্বামীর দাবি মত বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে না পারায় প্রাণ গেল আরও এক গৃহবধূর। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে পণ প্রথার বিরুদ্ধে একাধিক সচেতনতা মূলক বার্তা দেওয়া হলেও দেশ এখনও রয়েছে সেই তিমিরেই। এখনও পণ প্রথা জারি আছে সদর্পে। আর সেই পণের টাকা না দিতে পারার জন্য প্রাণ দিতে হল এক যুবতীকে। সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার নিমা বাহাদুরপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম সাবিনা খাতুন (বয়স ২৫ বছর)।
মৃত গৃহবধূর মায়ের অভিযোগ, বছর ছয়েক আগে নিমা গ্রামের দুলাল শেখ এর ছেলে দেবেশ শেখ এর সঙ্গে বিয়ে হয় বাহাদুরপুর গ্রামের সাবিনা বিবির। বিয়ের পর থেকেই নানা অছিলায় বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য ওই গৃহবধূর ওপর চাপ দেওয়া সহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত অভিযুক্ত স্বামী দেবেশ সেখ। সম্প্রতি জুয়ায় টাকা ঢালার জন্য পণ হিসেবে স্ত্রী সাবিনার বাপের বাড়ি থেকে টাকা চেয়েছিলাম দেবেশ। মৃত গৃহবধূর মা এও জানিয়েছেন, অত্যন্ত দারিদ্র্যের কারণে জামাইয়ের আবদার দিনের-পর-দিন পূরণ করতে পারছিলেন না তাঁরা।
আর সেই কারণেই রবিবার রাতে তাঁদের মেয়েকে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাস রোধ করে খুন করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। সোমবার সকালে মৃতার শ্বশুর বাড়ির গ্রামের বাসিন্দারা বাপের বাড়ির সদস্যদের খবর দিলে বাপের বাড়ির সদস্যরা গৃহবধূকে উদ্ধার করে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে বড়ঞা থানায় স্বামী দেবেশ সেখ সহ শ্বশুর বাড়ির তিন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের জন্য বড়ঞা ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মণীশ নন্দী ।পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে বড়ঞা থানার পুলিশ। সোমবার দুপুরে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কান্দি মহকুমা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা ।