১৯৪৪ সালের ১২ এপ্রিল ১৪৪০ টন বিস্ফোরক সামগ্রী নিয়ে ‘এম ভি স্টিকাইন’ নামে একটি জাহাজ বোম্বাই বন্দরের ভিক্টোরিয়া ডকে আসে। বন্দরে বিস্ফোরক পদার্থের প্রবেশ নিষেধ থাকা সত্ত্বেও সেই সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে বন্দরের সুরক্ষা সংক্রান্ত আইনকে শিথিল করে জাহাজটিকে বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেয় তৎকালীন ইংরেজ সরকার।
বিদেশ থেকে আসার পথে করাচি বন্দরে প্রচুর তুলো জাহাজে তোলা হয়। এছাড়াও জাহাজের খোলে অবিন্যস্ত ভাবে রাখা ছিল পিচ্ছিলকারী তেলের ড্রাম, ভারী কাঠ, লোহালক্কর, পুরনো ডায়নামো, অয়্যারলেস সেট ইত্যাদি। ১৪ই এপ্রিল দুপুরে জাহাজে আগুন লাগে। আগুন নেভানোর কাজে হাত দিয়ে দিতে না দিতেই বিকেল চারটের সময় গোলাবারুদে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণের দাবদাহে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় চারপাশের ৩০০ একর জায়গার সমস্ত বন্দর পরিকাঠামো এবং বসতি। ভিক্টোরিয়া বন্দরে থাকা 23 জাহাজের মধ্যে ১৫টি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়, বাকিগুলো প্রচন্ডভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনায় মৃত্যু হয় ১২৫০ জন মানুষের, যার মধ্যে ৬৬ জন ছিলেন কর্তব্যরত দমকলকর্মী । ১৯৬৩ সালে ভারত সরকার এই বেদনার ইতিহাসকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৪ই এপ্রিল দিনটিকে ‘জাতীয় অগ্নি পরিষেবা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই দিনটির স্মরণে আজ হলদিয়া বন্দরের এক নম্বর তৈল জেটির কাছে বন্দরের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের উদ্যোগে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অগ্নি নির্বাপনের পতাকা উত্তোলন করেন বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরা। তিনি তার ভাষণে দিনটির তাৎপর্য ও ওই দিনটির ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি বন্দরের অগ্নিনির্বাপণে গৃহীত ১২০ কোটি টাকার প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বন্দরের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কর্মীরা কুচকাওজের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড প্রদর্শন করেন। অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) প্রবীন কুমার দাস, কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার এস কে ঝা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।