আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে বিডিও-র শিরসাসন বার্তা—“সুস্থ শরীর, সচেতন পরিবেশ”

Share this page

নিজস্ব সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া:

আজ ২১শে জুন ২০২৫, আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে উলুবেড়িয়া-১ ব্লক অফিস প্রাঙ্গণে এক অনন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা গঙ্গা কমিটি, হাওড়া এবং West Bengal State NGRBA Program Management Group (WBSPMG)-এর যৌথ উদ্যোগে, ‘নমামি গঙ্গে’ মিশনের সহায়তায় এই কর্মসূচি আয়োজিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ ছিলেন ব্লকের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (BDO) শ্রী এইচ এম রিয়াজুল হক, যিনি নিজেই শিরসাসনের মাধ্যমে যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেন। তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন যোগাসন চর্চা হয়, যাতে শিশু, কিশোর ও বয়স্ক নাগরিকরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

উপস্থিত ছিলেন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রী অতীন্দ্র শেখর প্রামাণিক, যুগ্ম বিডিও শ্রীমতী লিপিকা রায়, বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রী সুরজ মণ্ডল, এবং কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শ্রী মোরাদ আলি।

তাঁদের সক্রিয় উপস্থিতি ও বক্তব্য এই দিবসের তাৎপর্য আরও গম্ভীর ও প্রেরণাদায়ক করে তোলে।

যোগের গুরুত্ব: শরীর, মন, আত্মা ও প্রকৃতির সংহতি

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “যোগ শুধু এক ধরনের ব্যায়াম নয়, এটি একটি জীবনশৈলী। নিয়মিত যোগাভ্যাস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, মানসিক চাপ হ্রাস, মনঃসংযোগ বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। শিশু থেকে প্রবীণ—সব বয়সের মানুষের জন্যই যোগ এক অপরিহার্য অনুশীলন।”

এই প্রসঙ্গে বিডিও শ্রী রিয়াজুল হক বলেন,

“যোগ কেবল শারীরিক ব্যায়াম নয়, এটি মনের সংহতি, আত্মার শান্তি এবং প্রকৃতির সঙ্গে মেলবন্ধনের একটি পথ। এই তিনটি একত্রে মিললেই একজন পরিপূর্ণ যোগী হওয়া সম্ভব।”

এই গভীর বক্তব্যে তিনি যোগের বহুমাত্রিক তাৎপর্যকে তুলে ধরেন, যা শারীরিক সুস্থতার গণ্ডি ছাড়িয়ে জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রভাব ফেলে।

গঙ্গা দূষণ রোধে সচেতনতা: WBSPMG ও নমামি গঙ্গে’র ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ

এই যোগ দিবস উপলক্ষে গঙ্গা দূষণ রোধ নিয়ে বিশেষ সচেতনতামূলক বার্তাও তুলে ধরা হয়। WBSPMG-এর কর্মকর্তারা বলেন—“গঙ্গা শুধু একটি নদী নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি, জীবন ও জীবিকার আধার। অথচ আজ দূষণ, প্লাস্টিক বর্জ্য, এবং স্যুয়েজের ফলে গঙ্গার স্বাস্থ্য বিপন্ন।”

‘নমামি গঙ্গে’ মিশনের আওতায় WBSPMG পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে:

• গৃহস্থালির নিকাশিজল শোধন (STP),

• কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা,

• জনসচেতনতা কর্মসূচি এবং

• নদীতীরবর্তী অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

যোগ যেমন মন ও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে, তেমনি গঙ্গা রক্ষা প্রকল্প আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। এই দুইয়ের সম্মিলনে একটি সুস্থ, সচেতন ও পরিবেশবান্ধব সমাজ গঠন সম্ভব।

উৎসবের আবহে সামাজিক বার্তা

অনুষ্ঠানের শেষে সেরা পারফর্মারদের হাতে স্মারক ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বিডিও শ্রী রিয়াজুল হক বলেন,

 

“যোগের অনুশীলন আমাদের নিজেকে ভালো রাখতে শেখায়, আর গঙ্গা রক্ষা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভালো রাখার দায়িত্ব। আজকের এই দিবস শুধু এক দিনের উদযাপন নয়, এটি দীর্ঘস্থায়ী সচেতনতার সূচনা।”

 

এই উদ্যোগে অংশ নেওয়া শতাধিক অংশগ্রহণকারীর উচ্ছ্বাস ও আগ্রহ প্রমাণ করে, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা এখন তৃণমূলেও ছড়িয়ে পড়ছে।

 

এই দিনটি উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে রইল প্রশাসন, পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং মানবিক মূল্যবোধের এক অনন্য সংমিশ্রণ হিসেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *