উলুবেড়িয়ায় শিশুদের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প: অটিজমসহ নানা রোগে আক্রান্ত শিশুর চিহ্নিতকরণ

Share this page

নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে ১৮ মাস থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার চিহ্নিতকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পূর্বে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে করা সার্ভের ভিত্তিতে এবার শিশুদের বিস্তারিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।

গতকাল হাওড়া জেলার সদর মহকুমার জন্য হাওড়া সদর হাসপাতাল ও উলুবেড়িয়া সাব ডিভিশনের জন্য উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পে মেডিসিন, অর্থোপেডিক, চক্ষু, ইএনটি, সাইকোলজি ও শিশু চিকিৎসা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা উপস্থিত থেকে শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

উলুবেড়িয়া সাব ডিভিশনের এই মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন উলুবেড়িয়া-১ ও ২ নম্বর ব্লকের CDPO সৌরভ চ্যাটার্জী, ACDPO অমিত কুমার মুখোপাধ্যায় ও সমিত ঘোষ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দুই ব্লকের তিনজন সুপারভাইজার ও একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী।

উল্লেখযোগ্যভাবে, উলুবেড়িয়া-১ ও ২ নম্বর ব্লক মিলিয়ে মোট ১৭ জন শিশুর মেডিকেল চেকআপ করা হয়, যার মধ্যে ৭ জন শিশুকে অটিজমে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও আরও কিছু শিশুর মধ্যে অন্যান্য শারীরিক সমস্যারও প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়ে।

শিশুগুলির চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য পরবর্তী পর্যায়ে নিয়মিত ফলোআপ ভিজিট, থেরাপি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই শিশুরা সমাজের মূল স্রোতে সামিল হতে পারে এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারে। ক্যাম্প শেষে শিশুদের হাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে স্বাস্থ্যকর খাবার তুলে দেওয়া হয়।

এই প্রসঙ্গে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও এইচ এম রিয়াজুল হক বলেন,

“প্রশাসনের লক্ষ্য শুধুমাত্র সমস্যার চিহ্নিতকরণ নয়, বরং ওই শিশুদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরাতে সবরকম চিকিৎসা, কাউন্সেলিং এবং থেরাপির ব্যবস্থা করা। অটিজম কোনো অভিশাপ নয় — সঠিক সময়ে চিকিৎসা এবং যত্ন পেলে এই শিশুরাও তাদের নিজস্ব প্রতিভা ও ক্ষমতায় সমাজে অবদান রাখতে পারে। আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি।”

উলুবেড়িয়া ১ ও ২ নম্বর ব্লকের CDPO সৌরভ চ্যাটার্জী বলেন,

“অটিজম নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এই ধরনের ক্যাম্পের মাধ্যমে শুধুমাত্র শিশুদের চিকিৎসা নয়, পরিবারের সদস্যদেরও কাউন্সেলিং ও সচেতন করা হচ্ছে, যাতে তারা সন্তানদের যথাযথভাবে সহযোগিতা করতে পারেন। আগামী দিনে নিয়মিত ফলোআপ ও থেরাপির মাধ্যমে এই শিশুদের বিকাশে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

অভিভাবকরা এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এমন উদ্যোগ শিশুদের ভবিষ্যৎ গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে। প্রশাসনের এই মানবিক প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This will close in 0 seconds