উলুবেড়িয়া দক্ষিণ চক্রের উদ্যোগে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে এক অভিনব ও সৃজনশীল শিল্প-নৈপুণ্য কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এইচ এম রিয়াজুল হক মহাশয়, উলুবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সুরাজ মন্ডল মহাশয়ের সক্রিয় সহযোগিতায় আয়োজিত হয় এই দিনব্যাপী কর্মশালা।
এই কর্মশালায় উলুবেড়িয়া দক্ষিণ চক্রের ৬১টি ও উত্তর চক্রের ৮টি বিদ্যালয়ের একজন করে শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। মূল লক্ষ্য ছিল প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের আনন্দমুখর পাঠ্যক্রমে যুক্ত করা এবং মোবাইল আসক্তি থেকে তাদের দূরে সরিয়ে সৃজনশীল শিক্ষার দিকে আগ্রহী করে তোলা। ফেলে দেওয়া ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী—যেমন তুলো কাঠি, সব্জির টুকরো, টুথব্রাশ, মাটির পাত্র, জুস স্ট্র, ডিমের খোসা, ছেঁড়া কাপড় ও কাগজের বোর্ড—ব্যবহার করে শিক্ষণীয় উপকরণ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এই কর্মশালার অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে সামনে রেখে শিশুদের পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তোলা এবং প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। প্লাস্টিক ফেলে না দিয়ে তা শিল্পকলার মাধ্যমে কিভাবে শিক্ষণীয় উপকরণে রূপান্তর করা যায়, তা তুলে ধরা হয় কর্মশালায়।
সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এইচ এম রিয়াজুল হক বলেন, “এই ধরনের কর্মশালা শিশুদের আনন্দ ও কৌতূহলের সঙ্গে পাঠগ্রহণে আগ্রহী করে তোলে। এর মাধ্যমে শিশুরা শুধু ভালো শিক্ষার্থীই নয়, বরং পরিবেশবান্ধব দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেও গড়ে উঠবে।”
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সুরাজ মন্ডল বলেন, “যারা গড়তে জানে, তাদের মন কখনো ভাঙে না। সৃষ্টিশীল শিক্ষার ভিত গড়ে তুলতেই এই প্রয়াস।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অতীন্দ্রশেখর প্রামাণিক, যিনি এই উদ্যোগকে আন্তরিক সাধুবাদ জানান এবং সকল শিক্ষককে আগামী দিনে বিদ্যালয় খুললে শিক্ষার্থীদের উপযোগী শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মশালায় অংশ নেন সুদীপ্ত শ্যাম চৌধুরী, নীলাঞ্জনা দত্ত ও সম্রাট ধাড়া। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা দাস, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আজিজুল হক, শেখ মফিজুল ও শিক্ষক কিংকর মণ্ডল প্রমুখ।
এই কর্মশালা নিঃসন্দেহে এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইল, যা শিশুদের মাঝে সৃজনশীলতা ও পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।