অবশেষে রুখে দেওয়া গেল বাল্য বিবাহ: উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসনের তৎপরতা

Share this page

উলুবেড়িয়া, ২১ মে, ২০২৫: দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসন এক ১২ বছরের ছাত্রীর বাল্য বিবাহ রুখে দিল। আজ, ২১ মে, ২০২৫ তারিখে খাড়িয়া মইনাপুর হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে মইনাপুর গ্রাম, পোস্ট–খাড়িয়া মইনাপুর, থানা–উলুবেড়িয়া, হাটগাছা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মেয়েটির বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল বারাকাচাড়ি, আমতলা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার এক যুবকের সঙ্গে।

বিশ্বস্ত সূত্রে তথ্য পেয়ে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের ICDS টিম দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই অভিযান পরিচালিত হয় সৌরভ চ্যাটার্জি (CDPO), সমিত ঘোষ (ACDPO), বান্দিতা শোম (সুপারভাইজার), সুপর্ণা কায়াল (অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী – AWW) এবং শর্মিলা দাস মণ্ডল (অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা – AWH)-এর নেতৃত্বে। তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিয়ের প্রস্তুতি বন্ধ করেন এবং পরিবারকে বিস্তারিতভাবে বাল্য বিবাহের সামাজিক ও আইনগত ক্ষতির কথা বোঝান। পরবর্তীতে পরিবার লিখিতভাবে জানায় যে, মেয়েটির প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে দেবে না এবং সে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে।

উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও এইচ. এম. রিয়াজুল হক এই প্রসঙ্গে বলেন, “বাল্য বিবাহ শুধু অবৈধ নয়, এটি একজন কন্যাশিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমরা আমাদের গ্রাসরুট টিমের সহায়তায় এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং সুস্থ ভবিষ্যত নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”

CDPO সৌরভ চ্যাটার্জি বলেন, “শুধু আইন প্রয়োগ করাই যথেষ্ট নয়, সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
“আর হারানো শৈশব নয় — বাল্য বিবাহ রুখতে হবে” এই স্লোগানকে সামনে রেখে উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসন ICDS ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে মিলে ব্লকের বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো বাল্য বিবাহ নির্মূল এবং কন্যাশিশুর শিক্ষার প্রসার। এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করল, স্থানীয় প্রশাসনের সদিচ্ছা এবং সচেতনতার মাধ্যমে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This will close in 0 seconds