উলুবেড়িয়া, ২৬ এপ্রিল:
উলুবেড়িয়া-১ নম্বর ব্লকের হিরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে আজ সেচের খাল সংস্কার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করলেন বিডিও এইচ. এম. রিয়াজুল হক। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্লক ইঞ্জিনিয়ার অমরনাথ গুড়িয়া এবং হিরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উত্তম মাইতি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জল সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তরের অর্থানুকূল্যে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ খালের সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে, যা স্থানীয় কৃষকদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে।
দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এই খালটি বৃষ্টির জলে ভরলেও শুষ্ক মৌসুমে একেবারে শুকিয়ে যেত। ফলে কৃষকদের সেচের জন্য নির্ভর করতে হতো বৃষ্টির ওপর অথবা বিকল্প ব্যয়বহুল পদ্ধতির ওপর। এই খাল সংস্কারের ফলে চাষবাসে সেচের জল সহজলভ্য হবে, ফলে খরচ কমবে এবং ফসলের উৎপাদনও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
পরিদর্শনকালে বিডিও রিয়াজুল হক খালপাড় ঘুরে সংস্কার কাজের মান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং প্রকৌশল বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে কাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেন। তিনি জানান, “সরকারের মূল লক্ষ্য কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। মাঠে মাঠে জল পৌঁছাতে পারলে কৃষি উৎপাদনে বিপুল উন্নতি সম্ভব। এই খাল শুধু জল নয়, মানুষের জীবনে সম্ভাবনার ধারা বয়ে আনবে।”
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান উত্তম মাইতি বলেন, “এই খাল সংস্কারের ফলে বহু কৃষক উপকৃত হবেন। ধান চাষের পাশাপাশি সবজি ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদনও অনেকটা বাড়বে।”
ব্লক ইঞ্জিনিয়ার অমরনাথ গুড়িয়া জানান, “খালপথ প্রশস্ত ও গভীর করে কাটা হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থাও উন্নত করা হয়েছে যাতে বর্ষার সময় জল আটকে না থাকে।”
এদিন উপস্থিত ছিলেন বহু কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, খাল সংস্কারের জন্য তাঁরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, “আগে খরচ করে মাটির পাম্পে জল তুলতে হতো। এখন খালের জলেই সেচের কাজ হবে। এতে ফসলও ভাল হবে, খরচও কমবে।”
গ্রামবাসীদের আশা, এখন থেকে খালের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে যাতে প্রতি বছর জল ধরে রাখা সম্ভব হয় এবং কৃষিক্ষেত্রে স্থায়ী উন্নতি সাধিত হয়।
একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে হিরাপুরের কৃষকসমাজ আজ যেন নতুন সম্ভাবনার স্রোতে ভেসে চলেছে। খালের জলে প্রতিফলিত হচ্ছে কৃষকের হাসিমাখা মুখ।